এগিয়ে আসছে পহেলা বৈশাখে। চাই নতুন জামা, শাড়ি, চুড়ি আরও কত-কী অনুষঙ্গ। কত বেছে, কত ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করতে হয় নিজের পছন্দের জিনিসটা। কত উত্তেজনা সে সবে। এত সবের মাঝে ভুলে যাচ্ছেন কি আপনার প্রিয় চুল সাজানোর কথা? ভেবেছেন কি, কীভাবে সাজাতে চান আপনার চুলরাশি?
বৈশাখের সকাল বেলায় প্রখর রোদ থাকে। সারাদিন সবার সঙ্গে আনন্দে মেতে থাকা আর ঘোরাঘুরি করতে হয়। তাই এইদিনে যেমনই সাজ হোক না কেন তা যেন হয় আরামদায়ক।
গরমের দিনে একটু ভারী কাপড় পরে থাকা যেমন কষ্টকর। তেমনি খোলা চুলে থাকা আরো কষ্টকর। এতে গরম বাড়িয়ে দেয় অনেক বেশি। তাছাড়া ফুল বিহীন বৈশাখি সাজ যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। লাল-সাদা শাড়ি, কপালে লাল টিপের সঙ্গে চুলের সাজে যদি একগুচ্ছ ফুল না থাকে তাহলে বুঝি ঠিক মানায় না। বাঙালি নারীর সাজ যেনো ফুলের মাধ্যমেই পূর্ণতা পায়। তো চলুন দেখে নেওয়া যাক এই বৈশাখের জন্য বিভিন্ন পোশাকে আরামদায়ক কিছু চুলের সাজ।
চুলে ফুলের সাজ:
## হাতখোঁপা অথবা একটু ভিন্নভাবে খোঁপা করে নিন। খোঁপার চারপাশে ছোট ছোট গোলাপ আটকে দিন। ঠিক খোঁপার মাঝখানে বড় একটি গোলাপ লাগান। এবার আয়নায় নিজেকে দেখুন কতটা সুন্দর লাগছে আপনাকে।
## পুরো খোঁপাটি বেলীফুলের মালা দিয়ে ঢেকে দিতে পারেন। কানের পাশ দিয়ে অন্যকোনো একটি ফুলের মালা লাগান। এতেও আপনাকে অনেক সুন্দর লাগবে।
## চুলগুলো গুছিয়ে নিয়ে বেণী করে ফেলুন। শক্তভাবে বেণী শুরুর প্রান্ত থেকে ৮ থেকে ১০টি বেলী ফুলের মালা আটকে নিন। বেণী করে শুধু গাজরা লাগাতে পারেন।
## একটু ভিন্নতা আনতে চাইলে বেলীফুলের সঙ্গে বেণীর উপর থেকে নিচ পর্যন্ত একটু পরপর ছোট সাদা গোলাপ আটকাতে পারেন।
## খোলা চুলেও কানের পাশ দিয়ে দু-তিনটি ফুল লাগিয়ে নিতে পারেন। বেণীজুড়ে ছোট কোনো ফুলের মালা পেঁচিয়ে পরতে পারেন। এতেও আপনাকে সুন্দর লাগব।
ফ্রেঞ্চ বেণি:
মুখের সঙ্গে মানিয়ে সিঁথি করে নিতে হবে। এবার সিঁথির এক পাশ থেকে অল্প চুল নিন। এই চুলগুলো তিন ভাগ করে ফ্রেঞ্চ বেণি শুরু করুন। বেণির বাঁধনের প্রতিটি ধাপে নিচ থেকে একগোছা চুল বেণিতে ঢুকিয়ে দিতে হবে। এক পাশের বেণি শেষ করে কানের কাছে আটকান। একইভাবে সিঁথির অন্য পাশেও বেণি করুন। এবার পেছনের সব চুল নিয়ে খেজুর বেণি করুন। ফ্রেঞ্চ বেণির মতোই খেজুর বেণি করা হয়। শুধু চুল তিন ভাগ না করে দুই ভাগ করুন। এক ভাগ থেকে একগোছা চুল নিয়ে অন্য ভাগে মিলিয়ে দিন। এভাবে পরপর একগোছার চুল আরেক গোছায় দিন। চুলের আগায় এসে একটা সুন্দর ব্যান্ড দিয়ে বেঁধে নিন। হয়ে গেল স্টাইলিশ ফ্রেঞ্চ বেণি। গরমের দিনে চুলও আটকে থাকলো, ধুলোময়লা কম জমলো। উপরন্তু গরম লাগবে কম।
টুইস্ট খোঁপা:
দাওয়াতের সাজে এই মৌসুমে শাড়ির সঙ্গে একটা খোঁপা না হলেই নয়। সাজে জমকালো ভাব আনতে সহজ এই খোঁপার জুড়ি নেই। টুইস্ট খোঁপার জন্য চুল ভালো করে আঁচড়ে নিন। সামনে লেয়ার কাট থাকলে এক পাশে সিঁথি করতে পারেন। সিঁথি ছাড়াও খোঁপাটি বেশ ভালো দেখায়। প্রথমে কপালের সামনের চুলগুলো আলাদ করুন। মাথার মাঝের চুলগুলো পাফ করে অল্প করুন। এবার সমনের চুলগুলো কয়েকটি গোছা করে নিন। প্রতিটি গোছাকে একে একে পেঁচিয়ে টুইস্ট করে পাফ করা চুলের ওপর দিয়ে পেছনে এনে ক্লিপ দিয়ে আটকে দিন। সামনের সব চুল টুইস্ট হয়ে গেলে পেছনের চুলগুলো রাবার দিয়ে আটকে নিন। সামনের মতো পেছনের চুলগুলোকে বেশ কয়েকটি গোছা করে নিন। প্রতিটি গোছাকে টুইস্ট করে পেঁচিয়ে খোঁপার শেপ করুন। আকর্ষণীয় লুক পেতে খোঁপার এক পাশে ফুল গুঁজে দিতে পারেন।
রোজেট ফ্লাওয়ার ব্রেইড:
সচরাচর আমরা কমবেশি সবাই বেণী করে থাকি। কিন্তু এই বেণীকেই যদি ফ্লাওয়ার আকার দেওয়া যায় তাহলে তা খুবই আকর্ষণীয় হেয়ার স্টাইলে পরিবর্তিত হয়। রোসেট ফ্লাওয়ার ব্রেইড এমনই একটি হেয়ার স্টাইল।
যা লাগবে: হেয়ার ব্রাশ। হেয়ার ব্যান্ড/ইলাস্টিক, পিন
ধাপসমূহ: চুল হেয়ার ব্রাশ দিয়ে ব্রাশ করে নিতে হবে। যাতে কোন গিঁট না থাকে। এবার চুলের একপাশে দিয়ে একটি বেণী করতে হবে। বেণীটিকে হালকা টেনে একটু ফুলিয়ে নিতে হবে। বেণীটি করা হয়ে গেলে ইলাস্টিক দিয়ে আটকে দিতে হবে। এবার বেণীটি ঘুরিয়ে এটিকে ফুলের আকৃতিতে আনতে হবে। ফুলের আকৃতি করা হয়ে গেলে প্রয়োজনীয় পিন দিয়ে আটকে দিতে হবে। খুব সহজেই হয়ে গেল সুন্দর একটি স্টাইল।
হেয়ার নট স্টাইল:
এভাবে চুল বাঁধার জন্য বিশেষ কিছুই লাগবে না, চুল একটু লম্বা হতে হবে আর সাথে হেয়ার ব্রাশ ও হেয়ার ক্লিপ থাকলেই আপনি এটি করে ফেলতে পারবেন। সাথে আপনি চাইলে কিছু চুল সাজাবার ডেকরেটর পিস ব্যবহার করতে পারেন।
যেভাবে করবেন: প্রথমে চুল ভালোভাবে আঁচড়ে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনি উষ্কখুষ্ক ভাব সরাতে হেয়ার ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এরপর চুল একপাশে এনে একে দুটিভাগে ভাগ করে নিতে হবে। এবার চুলে নট বাঁধার মতো করেই নট করতে হবে। প্রথম নটটি দেওয়ার পর দ্বিতীয়টি দিয়ে ফেলতে হবে।
তৃতীয় নটের শেষ মাথায় ইলাস্টিক ব্যান্ড দিয়ে আটকে দিতে হবে। এবার নটটি পিন দিয়ে আটকে দিতে হবে এবার কিছুটা ট্রেন্ডি ভাব নিয়ে আসতে নটের নিচের চুলে হালকা টিজিং করে ফেলতে হবে। ব্যস হয়ে গেল হেয়ার নট স্টাইল।
তথ্য ও ছবি ইন্টারনেট
